সিলেটে জাতীয় পরিচয়পত্রে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অপরাধ তদন্তে প্রমাণিত

প্রকাশিত: ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫

সিলেটে জাতীয় পরিচয়পত্রে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অপরাধ তদন্তে প্রমাণিত

রুহুল ইসলাম মিঠু, সিলেট জেলা প্রতিনিধি :
অসৎ উদ্দেশ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রে মিথ্যা তথ্য ধারণ করার অপরাধে সিলেট মহানগরীর সুবিদ বাজার বনকলাপাড়ার বাসিন্দা মৃত কামাল মিয়ার ছেলে সৈয়দ আবু নাঈম আজাদ টিপু’র বিরুদ্ধে ঘটনা তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট আদালত তাকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের বিবরণে জানা যায়, সিলেট এয়ারপোর্ট থানার সিআর ৬৪/২০২৪ ইং মামলার নিযুক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপুলিশ পরিদর্শক (এস.আই) মোঃ আতিকুর রহমান তার তদন্তকৃত প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্ঞাতসারে মিথ্যা, বিকৃত তথ্য ধারণ করার আপরাধে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন-২০২৩ এর ১৮, ২০(২), ২৩(১), ধারার অপরাধ প্রাথমিক ভাবে সত্য বলে প্রমাণ হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ৮ আগস্ট ২০২৫ইং ৪৬৬০ স্মারক নাম্বারে সংশ্লিষ্ট আদালতে ৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে সিআর ৬৪/২০২৪ ইং মামলার বিবাদী সৈয়দ আবু নাঈম আজাদ টিপু’র বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্রে তার আসল পিতা মোঃ কামাল মিয়ার নাম গোপন রেখে এর পরিবর্তে বনকলাপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ তছির আহমদের নাম জাতীয় পরিচয়পত্রে অসৎ স্বার্থ হাসিল করতে পিতা হিসেবে সংযুক্ত করেন। ২৩ এপ্রিল ১৯৯৪ ইং তারিখে জন্ম হওয়ার পরবর্তীতে টিপুর পিতা কামাল মিয়া মারা যান। সৈয়দ আবু নাঈম আজাদ টিপু ৮ আগস্ট ২০২৩ সালে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে দরখাস্ত দিয়ে তার জন্ম তারিখ সহ পিতার নাম সংশোধন করে পিতা কামাল এর পরিবর্তে সৈয়দ তছির আহমদের নাম তার পিতা হিসাবে সংশোধন করে সনদ নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্ত হন।
২০২২ সালের ১২ অক্টোবর তারিখে সিলেট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কাছে প্রতারক টিপু তার জাতীয় পরিচয়পত্র উপস্থাপন করলে সেখানে সে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান হিসেবে সন্দেহ দেখা দেয়। এই অবস্থায় টিপু বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ তছির আহমদের নামে তার সন্তান পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতে থাকে।
জীবদ্দশায় সৈয়দ তছির আহমদ ২টি বিবাহ করেন। প্রথম স্ত্রী রুনি বেগমের সংসারে ৫ সন্তান এবং ২য় স্ত্রী সাহেনা বেগমের সংসারে ৫ সন্তান সহ সর্বমোট ১০ সন্তানের জনক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ তছির আহমদ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ তছির আহমদ ১৯৯১ সালের ১৬ এপ্রিল বনকলাপড়াস্থ নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯২ সালের ১৬ জুন বিধবা সাহেনা বেগম দক্ষিণ সুরমা থানার কামাল মিয়ার সাথে ২য় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে এ সংসারে টিপু জন্ম লাভ করে। সে বড় হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা তছির আহমদের বংশীয় নাম পদবী তার নামের সাথে যুক্ত করে। পরবর্তীতে টিপু মুক্তিযোদ্ধা তছির আহমদের সম্পদে ভাগ বসানের চেষ্টা চালায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান টিপুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দলিল দস্তাবেজ, সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহণ করে তা যাচাই-বাছাই কালে তার প্রতারণা ধরা পড়ে। ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা মৃত সৈয়দ তছির আহমদের ছেলে সৈয়দ আবু মুহিম আজাদ বাদী হয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে টিপু-কে বিবাদী করে ৬৪/২০২৪ ইং মামলা দায়ের করে ছিলেন।